যারা ত্রাণ দিতে সুনামগঞ্জ বা পার্শ্ববর্তী এলাকায় যাবেন, তাদের জ্ঞাতার্থে পরামর্শ

এনামুল হক :
১। সুনামগঞ্জ শহরের আশপাশের এলাকায় ত্রাণ বিতরণ না করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যান নৌকা নিয়ে, সেখানে পানি বন্দী ভুখা মানুষ। (তাহিরপুর, দোয়ারা বাজার, শাল্লা বা এমন এলাকা)
২। ত্রাণ নিয়ে যে এলাকায় যাবেন সেই এলাকার চেয়ারম্যান বা মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করে স্থল ভাগ নির্দিষ্ট করুন যেখানে নৌকা ভিড়ানো যাবে।
৩। চেয়ারম্যান বা মেম্বারের সহায়তায় নির্দিষ্ট পরিবার বা ব্যক্তিকে আগে থেকে নির্ধারণ করে নিন, কাকে বা কাদের ত্রাণ দিবেন। (অগোছালো অনিয়ন্ত্রিত ত্রাণ দিলে কেউ পাবে কেউ পাবে না, বিশৃঙ্খলা হবে, সময় লাগবে)
৪। সবচেয়ে ভাল হয়, সবার সামনে স্থানীয় প্রতিনিধির হাতে ৫০/১০০/২০০ জনের ত্রাণ সমঝিয়ে দিয়ে আসুন, তারাই বিতরণ করবে।
৫। একটি পরিবারের জন্য ১/২ কেজি চাল বা এক বেলার খাবার নিয়ে যাবেন না, অন্তত এক সপ্তাহের খাবার দিন। এতে ২০০ পরিবারকে না দিতে পারলে ৫০ পরিবারকে দিন। তাদের কাজে লাগবে, কষ্ট লাঘব হবে অনেকাংশে।
৬। পানি কমছে, এখন এলাকার লোকজন রান্না করতে পারবে, সেই বিবেচনায় শুকনো খাবার না দিয়ে রান্না করতে পারে এমন খাদ্য সামগ্রী দিন।
৭। ছোট ছোট আকারে ত্রাণ না দিয়ে কয়েকটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে বড় আকারে ত্রাণ দিতে যান। এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।
৮। এমন যেন না হয়, লোকজন ৫/৭ কিলোমিটার নৌকা বেয়ে এসে আপনার কাছ থেকে এক প্যাকেট বিস্কুট বা এক প্যাকেট মুড়ি পেলো। (এক্ষেত্রে গালমন্দ শোনার সম্ভাবনা আছে)
৯। সময় নিয়ে এলাকায় যান, এলাকা পুরো নিমজ্জিত, মানুষ পানিবন্দী, বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছাতে অনেক সময় লাগবে।
১০। নিজেদের জন্য খাবার সাথে নিবেন, অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরবেন। এলাকার ভলান্টিয়ার সাথে রাখবেন (অবশ্যই)
১১। অনেকে দেখেছি কিছু খাবার নিয়ে গিয়ে সুনামগঞ্জ শহরেই তা বিতরণ করে ফটো তুলে শহরে ফিরে আসছেন। প্লিজ এমন করার চেয়ে না করাই উত্তম। শহরে এখন পানি নেই, মানুষ নিজেরা খাবার জোগাড় করতে পারবে।
১২। আপনি ইঞ্জিন নৌকায় গেলে সতর্কতার সাথে নৌকা চালাতে বলবেন, আশপাশে অনেকে ছোট নৌকা নিয়ে এসে সাহায্য চাইবে, ভীড় করবে, আপনার নৌকার ধাক্কায় দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা আছে। ত্রাণ নিতে আসা সবগুলো নৌকাতে ছোট ছোট বাচ্চা থাকে।
১৩। চাল, ডাল নিলে আগে থেকে ১০/১৫ কেজির প্যাকেট করে নিবেন, যাতে সহজে বিতরণ করা যায়।
১৪। আবারও বলছি, ছবি তোলার জন্য অল্প, স্বল্প ত্রাণ নিয়ে এলাকায় যাবেন না (মাইর খাওয়ার সম্ভাবনা আছে)
১৫। সুশৃঙ্খল ভাবে ত্রাণ দেয়ার ব্যবস্থা করুন, এলাকার ভলান্টিয়ারদের সাহায্য নিন। জয় হোক মানুষের।